সব
facebook raytahost.com
সেনা হেফাজতে কারা আছেন এবং তাদের ভবিষ্যৎ কী? | আজকের বাণী

সেনা হেফাজতে কারা আছেন এবং তাদের ভবিষ্যৎ কী?

সেনা হেফাজতে কারা আছেন এবং তাদের ভবিষ্যৎ কী?

বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর তার সরকারের মন্ত্রী, এমপি থেকে শুরু করে অনেকেই আত্মগোপনে চলে যান। মঙ্গলবার সেনাবাহিনী প্রধানের বক্তব্য থেকে জানা যায় তাদের কেউ কেউ সেনা হেফাজতে রয়েছেন।

ক্ষমতাচ্যুত মন্ত্রী, এমপিদের হেফাজতে নেয়া সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, তাঁদের জীবনের যে হুমকি আছে, সেটার জন্য আমরা তাঁদের আশ্রয় দিয়েছি।

তিনি বলেন, “তাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে যাতে কোন বিচারবহির্ভূত কাজ না হয়”।

তবে, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে বা মামলা হলে তারা শাস্তির আওতায় আসবেন বলেও উল্লেখ করেন সেনাপ্রধান।

কারা সেনা হেফাজতে রয়েছেন সেটি নিয়ে নাগরিক সমাজের মধ্যে কৌতূহল রয়েছে।

বুধবার সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)এর একটি সংলাপে অংশ নিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, কারা সেনা হেফাজতে আছে তার একটা তালিকা করা দরকার।

“এসব ব্যক্তিকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। তারা যাতে পালিয়ে যেতে না পারে সেটাও নিশ্চিত করতে হবে,” যোগ করেন তিনি।

কারা আছেন সেনা হেফাজতে?

পাঁচই অগাস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাবার পরপরই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে দেশত্যাগের চেষ্টা করেন তার মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য।

সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়।

তার কিছুক্ষণ পর আটক হন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটকে দেয়।

এ দু’জনকেই সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে বিমানবন্দর সূত্র বিবিসি বাংলাকে নিশ্চিত করেছিল।

সেদিন বাংলাদেশ পুলিশের এক বার্তায় জানানো হয়েছিল, ”প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ না করায় অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার সাথে পরামর্শক্রমে বিভিন্ন হাই প্রোফাইল ব্যক্তিবর্গ যেমন- সাবেক মন্ত্রী, এমপি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা, মিডিয়াকর্মীদের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন না করে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে।”

বিমানবন্দর থেকে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত এবং ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ মাহমুদকেও আটকের খবর আসে গণমাধ্যমে। তবে, তাদের সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে কি না সে ব্যাপারে কোনো তথ্য মেলে নি।

স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার চট্টগ্রামের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফ বিএনপি নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়লে তাকেও হেফাজতে নেয় সেনাবাহিনী।

চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান আজিজকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করার খবর প্রকাশ করে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানায়, তাকেও সেনাবাহিনীর হেফাজতে দেয়া হয়েছে।

এই তথ্য দুটি স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রী, এমপি বা নেতাদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের অনেকে দেশের বাইরে পালিয়ে গেছেন, কেউ কেউ আত্মগোপনে রয়েছেন। তাদের কেউ কেউ সেনা হেফাজতে থাকতে পারেন বলে ধারণা রয়েছে।

হেফাজতে থাকা মানুষের সংখ্যা ও পরিচয় সম্পর্কে জানতে বিবিসি বাংলার পক্ষ থেকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরে যোগাযোগ করা হয়। তবে, এ ব্যাপারে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খান।

মঙ্গলবার রাজশাহী সেনানিবাসে সেনাপ্রধান বলেন, “তাঁদের জীবনের যে হুমকি আছে, সেটার জন্য আমরা তাঁদের আশ্রয় দিয়েছি। যে দলেরই হোক, যে মতেরই হোক, যে ধর্মের হোক, সেটা আমরা করব।”

“তাদের বিরুদ্ধে যদি কোন অভিযোগ থাকে, মামলা হয় তবে অবশ্যই তারা শাস্তির আওতায় যাবেন। কিন্তু অবশ্যই আমরা চাইবো না যে এক্সট্রা জুডিশিয়াল কোন একশন তাদের উপর হোক,” যোগ করেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

মামলা হলে গ্রেপ্তারে বাধা থাকবে না’

বাংলাদেশে কয়েকদিন কার্যত সরকারবিহীন অবস্থা পার করার পর গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়।

এই সময়টায় পুলিশও ছিল অনুপস্থিত। ফলে, নিরাপত্তা কিংবা আইনিব্যবস্থা নেয়ার কাজ আপাতভাবে সামরিক বা আধা-সামরিক বাহিনীকেই করতে হয়েছে।

গত রোববার থেকে ধীরে ধীরে সচল হতে শুরু করে পুলিশের কার্যক্রম।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রি. জে. (অব) শামীম কামাল বিবিসি বাংলাকে বলেন, “উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যাদের ওপর মানুষের আক্রোশ তারা নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে সেনানিবাস এলাকাগুলোকে বেছে নিয়েছিল। সেনাবাহিনীর দিক থেকেও তাদের নিরাপত্তা দেয়াটা ছিল অত্যন্ত কার্যকরী পদক্ষেপ।”

“পাবলিকের হাতে পড়লে মব জাস্টিস বলে একটা কথা আছে, পাবলিক পিটিয়ে মেরেও ফেলতে পারতো,” যোগ করে মি. কামাল বলেন, “তেমন হলে পরিস্থিতির একটা নেগেটিভ কনোটেশন (নেতিবাচক অর্থ) দাঁড়াতো।”

তবে, যত তাড়াতাড়ি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তাদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

আরেকজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রি. জে. (অব.) বায়েজিদ সারোয়ার বলছেন, সামরিকবাহিনী হেফাজতে নিয়েছে বলার চেয়ে তারাই বাহিনীটির কাছে আশ্রয় চেয়েছে বলা অধিক যুক্তিযুক্ত হবে।

“নিজেদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে, জীবন বিপন্ন হতে পারে এমন শঙ্কা থেকেই সম্ভবত তারা সেনাবাহিনীর কাছে আশ্রয় চেয়েছেন, বলেন মি. সারোয়ার।

“মন্ত্রি-এমপিদের বিরুদ্ধে আদালতে রেগুলার মামলা হলে এবং সেনা কর্তৃপক্ষকে জানালে তখন পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতারে বাধা থাকবে না,” যোগ করেন তিনি।

শেয়ার

আপনার মতামত লিখুন :

এর আরও খবর
বাংলাদেশ সরকারের বিবৃতি: শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্যে ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ ৩২ নম্বরে ভাঙচুর

বাংলাদেশ সরকারের বিবৃতি: শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্যে ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ ৩২ নম্বরে ভাঙচুর

জুলাই চার্টারের ওপর নির্ভর করছে নির্বাচন কখন হবে: শফিকুল আলম

জুলাই চার্টারের ওপর নির্ভর করছে নির্বাচন কখন হবে: শফিকুল আলম

রংপুরে শেখ মুজিবের তিনটি ম্যুরাল ভাঙচুর

রংপুরে শেখ মুজিবের তিনটি ম্যুরাল ভাঙচুর

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন মনির হায়দার

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন মনির হায়দার

আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা

আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা

মোহাম্মদপুর থেকে নিখোঁজ সেই কিশোরীর সন্ধান মিলেছে- পুলিশ

মোহাম্মদপুর থেকে নিখোঁজ সেই কিশোরীর সন্ধান মিলেছে- পুলিশ

সর্বশেষ সংবাদ সর্বাধিক পঠিত
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
কার্যালয়: ১৯৫, ফকিরাপুল ১ম গলি, রহমান ম্যানশন, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০।
ই-মেইল : [email protected]
© ২০২৩-২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।