সব
facebook raytahost.com
এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা আরও ৫ ব্যাংক ঝুঁকিতে, ব্যাংক দখলের পরিণতি | আজকের বাণী

এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা আরও ৫ ব্যাংক ঝুঁকিতে, ব্যাংক দখলের পরিণতি

এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা আরও ৫ ব্যাংক ঝুঁকিতে, ব্যাংক দখলের পরিণতি

শুধু ইসলামী ব্যাংক নয়, আরও পাঁচটি ব্যাংক নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে ইচ্ছেমতো লুট করে ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে সদ্য বিদায়ী আওয়ামী সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। ঋণের নামে পাচার করা এই টাকা ব্যাংকে ফেরত না আসায় ব্যাংকগুলো দেড় বছর ধরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চাহিদামতো টাকা জমা রাখতে পারছে না। কিন্তু সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বিশেষ সুবিধা দিয়ে এসব ব্যাংকের কার্যক্রম স্বাভাবিক রেখেছিলেন। এখন রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব সুবিধা কাটছাঁট করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, চলতি হিসাবে ঘাটতি থাকায় নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করে ‘টাকা ছাপিয়ে’ ও নানা অভিনব সুবিধা দিয়ে এস আলম-নিয়ন্ত্রিত ছয়টি ব্যাংককে টিকিয়ে রেখেছিলেন সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এতে তৎকালীন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সায় ছিল। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরপরই আত্মগোপনে চলে যান সাবেক গভর্নর। তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব ব্যাংককে দেওয়া বিশেষ সুবিধার সীমা কমিয়ে দেয়। পাশাপাশি এসব ব্যাংকের এক কোটি টাকার বেশি অর্থের চেক ক্লিয়ারিং করার সুবিধাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ফলো করুন
এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা আরও ৫ ব্যাংক ঝুঁকিতে, ব্যাংক দখলের পরিণতি
শুধু ইসলামী ব্যাংক নয়, আরও পাঁচটি ব্যাংক নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে ইচ্ছেমতো লুট করে ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে সদ্য বিদায়ী আওয়ামী সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। ঋণের নামে পাচার করা এই টাকা ব্যাংকে ফেরত না আসায় ব্যাংকগুলো দেড় বছর ধরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চাহিদামতো টাকা জমা রাখতে পারছে না। কিন্তু সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বিশেষ সুবিধা দিয়ে এসব ব্যাংকের কার্যক্রম স্বাভাবিক রেখেছিলেন। এখন রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব সুবিধা কাটছাঁট করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, চলতি হিসাবে ঘাটতি থাকায় নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করে ‘টাকা ছাপিয়ে’ ও নানা অভিনব সুবিধা দিয়ে এস আলম-নিয়ন্ত্রিত ছয়টি ব্যাংককে টিকিয়ে রেখেছিলেন সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এতে তৎকালীন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সায় ছিল। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরপরই আত্মগোপনে চলে যান সাবেক গভর্নর। তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব ব্যাংককে দেওয়া বিশেষ সুবিধার সীমা কমিয়ে দেয়। পাশাপাশি এসব ব্যাংকের এক কোটি টাকার বেশি অর্থের চেক ক্লিয়ারিং করার সুবিধাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন
ইসলামী ব্যাংকের ৫০ হাজার কোটি টাকাই এস আলমের পকেটে
১৪ আগস্ট ২০২৪
ইসলামী ব্যাংকের ৫০ হাজার কোটি টাকাই এস আলমের পকেটে
গতকাল বুধবার নতুন গভর্নর হিসেবে যোগ দিয়েছেন বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। এসব ব্যাংক নিয়ে এখন কী করা হবে, সে ব্যাপারে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।

এসব ব্যাংকের বিষয়ে এ মুহূর্তে করণীয় প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরী প্রথম আলোকে বলেন, এখন কোনো ব্যাংক আর কৃত্রিমভাবে টিকিয়ে রাখা ঠিক হবে না। যেসব ব্যাংক দুর্বল হয়ে পড়েছে, সেই ব্যাংকগুলোর প্রকৃত অবস্থা যাচাইয়ে স্বাধীনভাবে নিরীক্ষা করাতে হবে। এরপরই ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা থাকলে সহায়তা করা যেতে পারে। না হলে দুর্বল ব্যাংক এভাবে টিকিয়ে রাখলে ভালো ব্যাংকগুলোর অবস্থাও খারাপ হয়ে পড়বে।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয় এস আলম গ্রুপ। এখন ব্যাংকটির এক-তৃতীয়াংশ ঋণই গ্রুপটির স্বার্থসংশ্লিষ্ট। একই বছরে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংককে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় দখল করে এস আলম গ্রুপ। আগের বছর তারা বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ এস আলম গ্রুপের হাতে। আর ২০০৪ সালে সিকদার গ্রুপ থেকে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ যায় এস আলম গ্রুপের কাছে।

ফলো করুন
এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা আরও ৫ ব্যাংক ঝুঁকিতে, ব্যাংক দখলের পরিণতি
শুধু ইসলামী ব্যাংক নয়, আরও পাঁচটি ব্যাংক নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে ইচ্ছেমতো লুট করে ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে সদ্য বিদায়ী আওয়ামী সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। ঋণের নামে পাচার করা এই টাকা ব্যাংকে ফেরত না আসায় ব্যাংকগুলো দেড় বছর ধরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চাহিদামতো টাকা জমা রাখতে পারছে না। কিন্তু সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বিশেষ সুবিধা দিয়ে এসব ব্যাংকের কার্যক্রম স্বাভাবিক রেখেছিলেন। এখন রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব সুবিধা কাটছাঁট করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, চলতি হিসাবে ঘাটতি থাকায় নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করে ‘টাকা ছাপিয়ে’ ও নানা অভিনব সুবিধা দিয়ে এস আলম-নিয়ন্ত্রিত ছয়টি ব্যাংককে টিকিয়ে রেখেছিলেন সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এতে তৎকালীন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সায় ছিল। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরপরই আত্মগোপনে চলে যান সাবেক গভর্নর। তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব ব্যাংককে দেওয়া বিশেষ সুবিধার সীমা কমিয়ে দেয়। পাশাপাশি এসব ব্যাংকের এক কোটি টাকার বেশি অর্থের চেক ক্লিয়ারিং করার সুবিধাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন
ইসলামী ব্যাংকের ৫০ হাজার কোটি টাকাই এস আলমের পকেটে
১৪ আগস্ট ২০২৪
ইসলামী ব্যাংকের ৫০ হাজার কোটি টাকাই এস আলমের পকেটে
গতকাল বুধবার নতুন গভর্নর হিসেবে যোগ দিয়েছেন বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। এসব ব্যাংক নিয়ে এখন কী করা হবে, সে ব্যাপারে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।

এসব ব্যাংকের বিষয়ে এ মুহূর্তে করণীয় প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরী প্রথম আলোকে বলেন, এখন কোনো ব্যাংক আর কৃত্রিমভাবে টিকিয়ে রাখা ঠিক হবে না। যেসব ব্যাংক দুর্বল হয়ে পড়েছে, সেই ব্যাংকগুলোর প্রকৃত অবস্থা যাচাইয়ে স্বাধীনভাবে নিরীক্ষা করাতে হবে। এরপরই ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা থাকলে সহায়তা করা যেতে পারে। না হলে দুর্বল ব্যাংক এভাবে টিকিয়ে রাখলে ভালো ব্যাংকগুলোর অবস্থাও খারাপ হয়ে পড়বে।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয় এস আলম গ্রুপ। এখন ব্যাংকটির এক-তৃতীয়াংশ ঋণই গ্রুপটির স্বার্থসংশ্লিষ্ট। একই বছরে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংককে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় দখল করে এস আলম গ্রুপ। আগের বছর তারা বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ এস আলম গ্রুপের হাতে। আর ২০০৪ সালে সিকদার গ্রুপ থেকে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ যায় এস আলম গ্রুপের কাছে।

বড় ঝুঁকিতে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক
২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে অনুষ্ঠিত বিশেষ সভায় চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপ সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়। আগের দিন রাতে ব্যাংকটির তৎকালীন চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও কোম্পানি সচিবকে তুলে নিয়ে যায় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা। ব্যাংকটির বর্তমান চেয়ারম্যান বেলাল আহমেদ হচ্ছেন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের জামাতা। যখন মালিকানা পরিবর্তন হয়, তখন ব্যাংকটির বিতরণ করা ঋণ ছিল প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা, যা এখন বেড়ে হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। নতুন ১৫ হাজার কোটি টাকা ঋণের বড় অংশই এস আলম গ্রুপ ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির কর্মকর্তারা।

এর মধ্যে এস আলমের ছেলে আহসানুল আলমের ইনফিনিয়া গ্রুপ ও নাবিল গ্রুপের ঋণও রয়েছে। এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটির অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটের মাধ্যমে প্রায় তিন বছর আগে চিনি ও তেল আমদানি করেছে, তবে এখনো সেই অর্থ শোধ করেনি। নিয়মানুযায়ী এক বছরের মধ্যে এই অর্থ শোধ করার কথা। তবে এক বছরের মধ্যে অর্থ আদায় না করলেও চলবে—বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ ক্ষমতাবলে ব্যাংকটিকে এই অনুমোদন দিয়ে রেখেছে। সম্প্রতি এই অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

ফলো করুন
এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা আরও ৫ ব্যাংক ঝুঁকিতে, ব্যাংক দখলের পরিণতি
শুধু ইসলামী ব্যাংক নয়, আরও পাঁচটি ব্যাংক নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে ইচ্ছেমতো লুট করে ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে সদ্য বিদায়ী আওয়ামী সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। ঋণের নামে পাচার করা এই টাকা ব্যাংকে ফেরত না আসায় ব্যাংকগুলো দেড় বছর ধরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চাহিদামতো টাকা জমা রাখতে পারছে না। কিন্তু সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বিশেষ সুবিধা দিয়ে এসব ব্যাংকের কার্যক্রম স্বাভাবিক রেখেছিলেন। এখন রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব সুবিধা কাটছাঁট করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, চলতি হিসাবে ঘাটতি থাকায় নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করে ‘টাকা ছাপিয়ে’ ও নানা অভিনব সুবিধা দিয়ে এস আলম-নিয়ন্ত্রিত ছয়টি ব্যাংককে টিকিয়ে রেখেছিলেন সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এতে তৎকালীন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সায় ছিল। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরপরই আত্মগোপনে চলে যান সাবেক গভর্নর। তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব ব্যাংককে দেওয়া বিশেষ সুবিধার সীমা কমিয়ে দেয়। পাশাপাশি এসব ব্যাংকের এক কোটি টাকার বেশি অর্থের চেক ক্লিয়ারিং করার সুবিধাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন
ইসলামী ব্যাংকের ৫০ হাজার কোটি টাকাই এস আলমের পকেটে
১৪ আগস্ট ২০২৪
ইসলামী ব্যাংকের ৫০ হাজার কোটি টাকাই এস আলমের পকেটে
গতকাল বুধবার নতুন গভর্নর হিসেবে যোগ দিয়েছেন বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। এসব ব্যাংক নিয়ে এখন কী করা হবে, সে ব্যাপারে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।

এসব ব্যাংকের বিষয়ে এ মুহূর্তে করণীয় প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরী প্রথম আলোকে বলেন, এখন কোনো ব্যাংক আর কৃত্রিমভাবে টিকিয়ে রাখা ঠিক হবে না। যেসব ব্যাংক দুর্বল হয়ে পড়েছে, সেই ব্যাংকগুলোর প্রকৃত অবস্থা যাচাইয়ে স্বাধীনভাবে নিরীক্ষা করাতে হবে। এরপরই ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা থাকলে সহায়তা করা যেতে পারে। না হলে দুর্বল ব্যাংক এভাবে টিকিয়ে রাখলে ভালো ব্যাংকগুলোর অবস্থাও খারাপ হয়ে পড়বে।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয় এস আলম গ্রুপ। এখন ব্যাংকটির এক-তৃতীয়াংশ ঋণই গ্রুপটির স্বার্থসংশ্লিষ্ট। একই বছরে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংককে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় দখল করে এস আলম গ্রুপ। আগের বছর তারা বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ এস আলম গ্রুপের হাতে। আর ২০০৪ সালে সিকদার গ্রুপ থেকে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ যায় এস আলম গ্রুপের কাছে।

বড় ঝুঁকিতে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক
২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে অনুষ্ঠিত বিশেষ সভায় চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপ সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়। আগের দিন রাতে ব্যাংকটির তৎকালীন চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও কোম্পানি সচিবকে তুলে নিয়ে যায় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা। ব্যাংকটির বর্তমান চেয়ারম্যান বেলাল আহমেদ হচ্ছেন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের জামাতা। যখন মালিকানা পরিবর্তন হয়, তখন ব্যাংকটির বিতরণ করা ঋণ ছিল প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা, যা এখন বেড়ে হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। নতুন ১৫ হাজার কোটি টাকা ঋণের বড় অংশই এস আলম গ্রুপ ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির কর্মকর্তারা।

এর মধ্যে এস আলমের ছেলে আহসানুল আলমের ইনফিনিয়া গ্রুপ ও নাবিল গ্রুপের ঋণও রয়েছে। এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটির অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটের মাধ্যমে প্রায় তিন বছর আগে চিনি ও তেল আমদানি করেছে, তবে এখনো সেই অর্থ শোধ করেনি। নিয়মানুযায়ী এক বছরের মধ্যে এই অর্থ শোধ করার কথা। তবে এক বছরের মধ্যে অর্থ আদায় না করলেও চলবে—বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ ক্ষমতাবলে ব্যাংকটিকে এই অনুমোদন দিয়ে রেখেছে। সম্প্রতি এই অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

আরও পড়ুন
ইসলামী ব্যাংকে ‘ভয়ংকর নভেম্বর’
২৪ নভেম্বর ২০২২
৭ আগস্টের হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের চলতি হিসাবে নগদ জমাসহ (সিআরআর) ব্যাংকটির ঘাটতি ছিল ২ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা। এরপরও ব্যাংকটির লেনদেন অব্যাহত রয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের মতো এই ব্যাংকেও চট্টগ্রামের পটিয়া এলাকার লোকদের বেশি হারে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যাঁরা ব্যাংকটির বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার মূল দায়িত্বে রয়েছেন।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, ২০২৩ সাল শেষে ব্যাংকটিতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ সুবিধায় ব্যাংকটি খেলাপি দেখিয়েছে মাত্র ১ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা। ফলে ব্যাংকটি ৭ হাজার ৯২৪ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ গোপন করেছে। এভাবে ব্যাংকটি কৃত্রিম মুনাফা করেছে, লভ্যাংশ নিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

ব্যাংকটির এমডি জাফর আলম বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক ছাড় দিয়ে ঋণ নিয়মিত করার লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছিল, আমরা তার চেয়ে বেশি ঋণ নিয়মিত করেছি। চলতি হিসাব ভালো হয়ে আসছিল, বর্তমান পরিস্থিতিতে তা আবার ঘাটতিতে চলে গেছে। অফশোর ইউনিটের ঋণ আদায়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’

ব্যাংকটির একাধিক উদ্যোক্তা সম্প্রতি প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সহায়তায় এস আলম চক্র ও তার সহযোগীরা ব্যাংকটি থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করেছে। তাঁরা দ্রুত পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার দাবিও জানান।

ইউনিয়ন ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক
২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করে গ্লোবাল ইসলামী (সাবেক এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক) ও ইউনিয়ন ব্যাংক। কিছুদিন পর গ্লোবাল ইসলামীতে এমডি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারকে। এই দুই ব্যাংক যা ঋণ দিয়েছে, তার বেশির ভাগই ট্রেডিং প্রতিষ্ঠানের নামে। এসব ঋণ এস আলম গ্রুপের বলেই জানিয়েছেন ব্যাংক দুটির ঋণ বিভাগের কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২১ সালে ইউনিয়ন ব্যাংকে চিঠি দিয়ে জানায়, ব্যাংকটির বিতরণ করা ঋণের ১৮ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা খেলাপি হওয়ার যোগ্য, যা ব্যাংকটির মোট ঋণের ৯৫ শতাংশ। অর্থাৎ ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে যত ঋণ বিতরণ করেছে, তার সিংহভাগই খেলাপি বা অনিয়মযোগ্য। পরে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে দেন সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এখন ব্যাংকটির ঋণ বেড়ে হয়েছে প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা। ঋণের টাকা আদায় না হওয়ায় ব্যাংকটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে থাকা চলতি হিসাবে ঘাটতি হয়েছে। ৭ আগস্ট সিআরআরসহ ঘাটতি ছিল ২ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা। এরপরও ব্যাংকটির লেনদেন নিয়মিত রয়েছে, তবে এখন তা সীমিত করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ইউনিয়ন ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. সেলিম উদ্দিন আগে ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে এত দিন টাকা দিয়ে আসছিল, এখন দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে চেক ক্লিয়ার করতে সমস্যা হচ্ছে। আমি চেয়ারম্যান হলেও তেমন কিছুটা জানি না। আশা করি, দ্রুত ঠিক হয়ে আসবে। ব্যাংকগুলোতে সুশাসন নিশ্চিত করা দরকার।’

শেয়ার

আপনার মতামত লিখুন :

এর আরও খবর
টানা ১০ দিনের কর্মসূচি দিল বিএনপি

টানা ১০ দিনের কর্মসূচি দিল বিএনপি

খাগড়াছড়িতে সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ

খাগড়াছড়িতে সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ডাকাত সন্দেহে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ডাকাত সন্দেহে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা

চা শ্রমিকদের কষ্টের জীবন

চা শ্রমিকদের কষ্টের জীবন

বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩১, ক্ষতিগ্রস্ত ৫৮ লাখ মানুষ

বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩১, ক্ষতিগ্রস্ত ৫৮ লাখ মানুষ

সন্ধ্যায় জাতীর উদ্দেশ্যে ভাষন দিবেন প্রধান উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় জাতীর উদ্দেশ্যে ভাষন দিবেন প্রধান উপদেষ্টা

সর্বশেষ সংবাদ সর্বাধিক পঠিত
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
কার্যালয়: ১৯৫, ফকিরাপুল ১ম গলি, রহমান ম্যানশন, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০।
ই-মেইল : [email protected]
© ২০২৩-২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।