নারী বিশ্বকাপ সরিয়ে নেয়া হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে হতে যাচ্ছে এবারের আসর। ক্রিকবাজের খবর অনুযায়ী গতকাল আইসিসি’র এক ভার্চ্যুয়াল বোর্ড মিটিংয়ে এমন সিদ্ধান্ত হয়। যেকোনো সময় আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে। গতকাল আইসিসি’র সভায় অংশ নেয়া বেশির ভাগ দেশের বোর্ড প্রধানরাই বাংলাদেশে বিশ্বকাপ আয়োজনে আপত্তি জানান। তাদের মতে বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে বিশ্ব আসর আয়োজন করা সম্ভব নয়। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এ ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে আয়োজক হিসেবে বাংলাদেশের নামই থাকবে। এবারের বিশ্বকাপ হবে আগামী ৩ থেকে ২০শে অক্টোবর পর্যন্ত।
এবারই প্রথম বাংলাদেশ থেকে কোনো বৈশ্বিক আসর অন্য দেশে সরিয়ে নেয়া হলো। আর সাম্প্রতিক সময়ে ২০২০ সালে ছেলেদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ করোনার
কারণে ভারত থেকে সরিয়ে নেয়া হয় আরব আমিরাতে
আর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগে নিষিদ্ধ হওয়ায় গত বছর শ্রীলঙ্কা থেকে সরিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় আয়োজন করা হয় অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ।
গত দেড় মাসের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে। টানা ৩৬ দিনের আন্দোলন শেষে ৫ই আগস্ট পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হলেও দেশ এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিরাপত্তা দিতে হয়েছে সেনাবাহিনীকে। স্টেডিয়াম অঞ্চলে অবাধ চলাচল এখনো বন্ধ করা যায়নি। নিরাপত্তা ইস্যুতে পরিচালকরাও নিয়মিত অফিস করছেন না। সবমিলিয়ে বিসিবি’র নিজেদের অবস্থাই এখন অস্থির। এ ছাড়া বিশ্বকাপে অংশ নেবে এমন ৫টা দেশ বাংলাদেশ সফরে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
যদিও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেয়া হয় বিশ্বকাপ আয়োজনে সর্বোচ্চ চেষ্টার। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজনও জানান, অভিজ্ঞতা বিচারে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য ৫ দিন সময় দিয়েছে আইসিসি। সেই সময় শেষ হয় গতকাল। এরমধ্যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি বিসিবি। তাই শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে বিশ্বকাপ সরিয়ে নিলো আইসিসি।
এদিকে সোমবার বাংলাদেশে বিশ্বকাপ আয়োজন ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক অ্যালিসা হিলি। তিনি বলেছিলেন, ‘এ মুহূর্তে সেখানে (বাংলাদেশে) একটা ক্রিকেট ইভেন্ট চলা এবং যে দেশ সত্যিই ভুগছে তাদের পুঁজি নিয়ে অন্য জায়গায় (বিশ্বকাপে) ব্যবহারের ব্যাপারটি আমার কাছে কঠিন মনে হচ্ছে। যেসব মানুষ মারা যাচ্ছে, তাদের সহায়তায় এখন সবাইকে প্রয়োজন।’
হিলি মানবিকতার কথাও বলেন, ‘এ মুহূর্তে মানুষ হিসেবে সেখানে খেলার ব্যাপারটি আমার জন্য ঠিক বোধগম্য হচ্ছে না। মনে হচ্ছে এটি হয়তো ভুল একটা কাজ হবে। নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশে একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজনের চেয়ে বড় ব্যাপার ঘটছে। তবে আমি এটি আইসিসি’র ওপর ছেড়ে দেবো।’
বাংলাদেশের বিকল্প হিসেবে ভারতের নাম শোনা যাচ্ছিল। তবে আবহাওয়া, পরের বিশ্বকাপ একই দেশে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ থাকায় ভারত এবারের নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে আসরটি আয়োজন করতে। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে সময় ব্যবধানে আদর্শ পার্থক্য ও আবহাওয়া বিচারে সংযুক্ত আরব আমিরাতকেই বেছে নিয়েছে আইসিসি।