খলাফত মজলিসের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বৃহস্পতিবার রাতে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বলা হয়, কোনো পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই ভারত বাঁধ খুলে দিয়ে রাজনৈতিক বন্যা পরিস্থিতি তৈরি করেছে। ভয়াবহ এই বন্যা পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ ও সমবেদনা প্রকাশ করা হয়। এছাড়া সভায় জাতীয় ঐক্য এবং ইসলামী দল ও সংগঠনগুলোর মধ্যে ঐক্য ও সংহতি নিয়ে আলোচনা হয়। পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতার মাধ্যমে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে গুরুত্বারোপ করা হয়।
সভায় বলা হয়, বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের ফেনীসহ ১২টি জেলায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। প্রায় অর্ধকোটি মানুষ পানি বন্দী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। কোনো পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই ভারত বাঁধ খুলে দিয়ে রাজনৈতিক বন্যা পরিস্থিতি তৈরি করেছে। প্রতিবেশী দেশের কাছে এ ধরনের অন্যায় ও অমানবিক আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। বন্যা কবলিত মানুষকে উদ্ধারের জন্য সরকারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে এবং এক্ষেত্রে বিত্তবানদেরকে বানভাসীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানানো হয়।
বলা হয়, মুসলমানদের বিপদের কারণ অনৈক্য।
বিজ্ঞাপন
ইসলাম কায়েমের জন্য ছোটখাটো মতভেদ ভুলে ভ্রাতৃত্ব, ভালোবাসা, সম্মান ও শ্রদ্ধার মাধ্যমে আমাদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। কাবা এক, রাসূল এক, কুরআন এক-মৌলিক বিষয়গুলোতে সকল ইসলামী দল ও সংগঠনের মধ্যে ঐকমত্য তৈরি করে এগিয়ে যেতে হবে। লাখো ছাত্রজনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জগদ্দল পাথর আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। হাজারো ছাত্র, আলেম-উলামা ও মানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এ বিজয় দেশপ্রেমিক ছাত্রজনতার কাঙ্ক্ষিত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবে।
ফ্যাসিবাদের দোসররা গণঅভ্যুত্থান ও ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে নস্যাৎ করার জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে অভিযোগ করা হয় সভায়। বলা হয়, এদেরকে চিহ্নিত করে আইনানুগভাবে দমন করতে হবে। সকলকে সতর্ক থাকতে হবে যে, গণঅভ্যুত্থান বা ছাত্র-জনতার বিপ্লবের লক্ষ্য যেন ব্যাহত না হয়। ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সকলকে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও মাওলানা আবদুল হালিম। খেলাফত মজলিসের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দলের আমীরে মজলিস মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদ, মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন, নায়েবে আমীর মাওলানা আহমদ আলী কাশেমী, যুগ্ম মহাসচিব যথাক্রমে এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন, মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুল জলিল এবং প্রশিক্ষণ ও প্রকাশনা সম্পাদক অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম।