সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৫৫জনের নামে গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার সময় গত ২০ জুলাই নজরুল ইসলাম (৩২) নিহতের ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মোছাঃ পূর্নিমা বেগম বাদি হয়ে বুধবার (২৭ আগস্ট) এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় অজ্ঞাত পরিচয়ের আরো দুইশত জনকে আসামি করা হয়েছে। বাসন থানার ওসি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাস্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক, সাবেক এমপি জাহিদ আহসান রাসেল, মেহের আফরোজ চুমকি, সিমিন হোসেন রিমি, রুমানা আলী টুসি, আখতার উজ্জামান, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, সাধারণ সম্পাদক আতাউল্যাহ মন্ডল, সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, আওয়ামীলীগ নেতা মতিউর রহমান মতি, আসাদুর রহমান কিরণ, আফজাল হোসেন সরকার রিপন, মহানগর যুবলীগের আহবায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেলসহ আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও সিটি করপোরেশনের কয়েকজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে আসামি করা হয়েছে।
নিহতের নাম নজরুল ইসলাম (৩২), তিনি সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ থানার বারইভাগ এলাকার মোঃ জামাল শেখের ছেলে। গাজীপুর মহানহগরীর বাসন থানার চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার শাহাবুদ্দিন মন্ডলের বাসায় ভাড়া থাকতেন নজরুল ইসলাম।
এজাহারে বাদি উল্লেখ করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগদানের উদ্দেশ্যে গত ২০ জুলাই বেলা ১২টার দিকে তার স্বামী নজরুল ইসলাম ঢাকা-ময়মনসিংহ গামী মহাসড়কের পূর্ব পাশে বাসন থানাধীন চান্দনা এলাকায় পশমী সোয়েটার গামেন্টসের পাঁকা রাস্তার উপর এসে সমাবেশে অংশগ্রহণ করে। সেখানে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ চলাকালে মামলার প্রথম ১৬জন আসামির নির্দেশে তাদের সঙ্গে থাকা বন্দুক, পিস্তল, লাঠি, লোহার রড, রামদা, ছেন, চাপাতি, কোবাসহ মারাত্মক দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার উপর অতর্কিতভাবে হামলা করে। তারা হত্যার উদ্দেশ্যে উপর্যুপরীভাবে কিল ঘুষি মেরে, লাঠি ও লোহার রড দিয়ে আঘাত করে এলোপাথারী মারধর এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে একাধিক আন্দোলনকারীদের শরীরের নীলাফুলা, জখমসহ গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম করে। অবৈধ অস্ত্রধারী এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাত বিবাদীরা ছাত্র জনতাকে লক্ষ্য করে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথারীভাবে গুলি ছুড়িতে থাকে, ঐ সময় বিবাদীদের ছোড়া গুলিতে নজরুল ইসলাম তার পিঠের ডান পাশে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করে।
পরে তাৎক্ষনিক স্বামীর লাশ নিয়ে শ্বশুড়বাড়ী সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ থানাধীন বারইবাগ গ্রামে লাশ দাফন সম্পন্ন করেন। স্বামীর মৃত্যুতে আমার পরিবারের লোকজন মানসিকভাবে বিপর্যন্ত হওয়ায় এবং বর্তমানে দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি অস্বাভাবিক থাকায় উক্ত আসামীদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে থানায় এসে এজাহার দায়ের করতে বিলম্ব হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করেছেন।