যশোর জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার একটি ভিডিও নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে তিনজনের মধ্যে দু’জনের মুখমণ্ডল কালো কাপড়ে ও আরেকজনের মুখ সাদা কাপড়ে ঢাকা। কালো কাপড়ে যাদের মুখ ঢাকা তাদের হাতে অস্ত্র।
আর সাদা কাপড় দিয়ে মুখ ঢাকা ব্যক্তিকে আরবি ভাষায় কিছু বলতে শোনা গিয়েছে।
গতকাল বুধবার রাতে এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর এটি সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ-বিশ্লেষক অনেকের প্রোফাইল থেকে শেয়ার হয়।
বাংলাদেশ ও ভারতের গণমাধ্যমেও এ নিয়ে বেশ আলোচনা তৈরি হয়েছে।
যদিও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় পুলিশ বুধবার রাতেই জানিয়েছে, ভিডিওটিকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, আসল ঘটনা সেরকম না।
যে কওমি মাদ্রাসাটি নিয়ে এখন এত আলোচনা হচ্ছে, তার অবস্থান যশোর শহরেই। সেখানে আসলে কী হয়েছিলো তা জানতে স্থানীয় পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেছিলো বিবিসি বাংলা।
যশোর জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) জিয়া উদ্দিন আহমেদ জানান, গত ১৭ই ডিসেম্বর ওই মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে একটি বার্ষিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিলো।
অনুষ্ঠানে অনেক ধরনের পর্ব ছিল। সেরকম-ই একটি ইভেন্ট হলো ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে যে তিনজনকে দেখা গিয়েছে, তারা ওই মাদ্রাসারই শিক্ষার্থী।
মি. আহমেদ বলেন, “তারা ফিলিস্তিনের মুক্তির সংগ্রামকে উপস্থাপন করতে চেয়েছে।”
“এটা বাচ্চারা করেছে। কোনোকিছু না বুঝে তারা এটি করে ফেলেছে। আর সেখানকার যারা আয়োজক তারাও বিষয়টি বুঝে উঠতে পারে নাই,” বলছিলেন তিনি।
তিনি বলছিলেন, “কেউ বিভ্রান্তির জন্য গতকাল রাতে অনুষ্ঠানের একটি ক্লিপ ছড়িয়ে দিয়েছে।”
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা শুরু হলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেও জানান তিনি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তারা জানতে পেরেছেন, ভিডিওতে যে অস্ত্র দেখা গিয়েছে তা মূলত কাঠ ও শোলা দিয়ে তেরি “অস্ত্রসদৃশ একটি বিষয়”। তাদের ভেস্টও নকল ছিল।
এ ব্যাপারে ওই মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি লুৎফুর রহমান ফারুকীও গতকাল গণমাধ্যমে কথা বলেছেন। তার ভাষ্য, “ইসরায়েলিরা ফিলিস্তিনের ওপর যে হামলা করেছে তার প্রতিবাদ করার জন্য এটি করেছে। কিন্তু এটাকে একটি গোষ্ঠী বা সম্প্রদায় ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার জন্য এটি করেছে।”
ভিডিওতে আরবিতে যে বক্তব্য শোনা গিয়েছে তাতে আসলে কী বলা হয়েছে, জানতে চাওয়া হয়েছিলো ইসলামিক ফাউন্ডেশন হালাল সনদ বিভাগের উপ-পরিচালক ড. মো. আবু ছালেহ পাটোয়ারী’র কাছে।
তিনি জানিয়েছেন, সেখানে ফিলিস্তিন ও বায়তুল মুকাদ্দাসে মুসলমানদের ওপর চলমান অত্যাচারের কথা বলা হয়েছে। জিহাদ সংক্রান্ত কথাও বলা হয়েছে।